২৪ মার্চ, ১৯৭১। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সমাগত বিভিন্ন মিছিলকারীর উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রায় বিরামহীনভাবে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, আর আলোচনা নয়, এবার ঘোষণা চাই। তিনি বলেন, আগামীকালের মধ্যে সমস্যার কোনো সমাধান না হলে বাঙালিরা নিজেদের পথ বেছে নেবে। আমরা সাড়ে সাত কোটি মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সরকারের প্রতি তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বাংলার জনগণের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হলে তা বরদাস্ত করা হবে না।
২৩ মার্চ রাত হতে ২৪ মার্চ সকাল পর্যন্ত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সৈয়দপুর সেনানিবাসের পার্শ্ববর্তী বোতলাগাড়ী, গোলাহাট ও কুন্দুল গ্রাম ঘেরাও করে অবাঙালিদের সাথে নিয়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে ১০০ জন নিহত হয় এবং ১ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়। শহরে কারফিউ দিয়ে সেনাবাহিনীর সদস্য এবং অবাঙালিরা সম্মিলিতভাবে বাঙালিদের বাড়িঘরে আগুন দেয় এবং হত্যাযজ্ঞ চালায়।
রংপুর হাসপাতালের সামনে ক্রুদ্ধ জনতা ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে পাকসেনারা রংপুর সেনানিবাস সংলগ্ন এলাকায় নিরস্ত্র লোকজনের ওপর বেপরোয়াভাবে গুলিবর্ষণ করে। এতে কমপক্ষে ৫০ জন নিহত এবং বহু লোক আহত হয়।
চট্টগ্রামে পাকসেনারা নৌ-বন্দরের ১৭ নম্বর জেটিতে নোঙর করা এমভি সোয়াত জাহাজ থেকে সমরাস্ত্র খালাস করতে গেলে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ তাদের ঘিরে ফেলে। সেনাবাহিনীর সদস্যরা জাহাজ থেকে কিছু অস্ত্র নিজেরাই খালাস করে ১২টি ট্রাকে করে নিয়ে যাবার সময় জনতা পথ রোধ করে। সেনাবাহিনী ব্যারিকেড রচনাকারী জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালালে ২০০ শ্রমিক শহীদ হন।